সিলেট বিডি ভিউ: বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পাহাড়, নদী আর প্রবাসী প্রভাবিত অঞ্চল সিলেট দেশের অন্যতম সমৃদ্ধ এলাকা। প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ, পর্যটন, রেমিট্যান্স ও মানবসম্পদে সিলেটের অবস্থান অনন্য। কিন্তু এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সিলেট আজও উন্নয়নের মূল স্রোতে পিছিয়ে আছে।
এর প্রধান কারণ কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসনের অভাব।
আর্থিক স্বায়ত্তশাসন মানে কী?
আর্থিক স্বায়ত্তশাসন মানে হলো, কোনো অঞ্চল নিজের রাজস্ব (ট্যাক্স) সংগ্রহ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পাবে। অর্থাৎ, স্থানীয় সম্পদ থেকে যে আয় হয়, তা সেই এলাকার উন্নয়নে সরাসরি ব্যবহার করা যাবে, কেন্দ্রের অনুমতির অপেক্ষা ছাড়াই।
কেন সিলেটের স্বায়ত্তশাসন প্রয়োজন?
1. অর্থনৈতিক শক্তি স্থানীয়করণ:
সিলেট থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ রেমিট্যান্স হিসেবে দেশে আসে। কিন্তু এই অর্থের বেশিরভাগই স্থানীয় উন্নয়নে কাজে লাগে না। স্বায়ত্তশাসন থাকলে এই অর্থ সিলেটের অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পর্যটন উন্নয়নে বিনিয়োগ করা যেত।
2. দ্রুত সিদ্ধান্ত ও বাস্তবায়ন:
এখন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় অনুমোদনের জন্য মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। স্থানীয় প্রশাসনের হাতে ক্ষমতা থাকলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া ও বাস্তবায়ন সম্ভব।
3. স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী উন্নয়ন:
কেন্দ্রের দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং সিলেটবাসীর বাস্তব চাহিদা, যেমন বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সড়ক উন্নয়ন, পাহাড়ি ও চা-বাগান অঞ্চলের জীবনমান উন্নয়ন, এগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে।
বলা হয়, সিলেট দ্বিতীয় লন্ডন। বাস্তবে হবে কি?
লন্ডনের উন্নয়ন হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের শক্তি ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতার মাধ্যমে।
সিলেট যদি কেবল আর্থিক স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ পায়, যেমন, নিজস্ব রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষমতা।
উন্নয়ন ব্যয়ের স্বাধীনতা এবং প্রবাসী বিনিয়োগকে কাজে লাগানো।
তাহলে সিলেটের উন্নয়নের গতি দ্বিগুণ নয়, বহুগুণ বেড়ে যাবে।
তখন বিদেশে থাকা প্রবাসীরা নিজের এলাকায় বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন। নতুন শিল্প, পর্যটন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
আর তখনই সিলেট হতে পারে বিশ্বের বুকে “দ্বিতীয় লন্ডন” সমৃদ্ধ, আধুনিক, আত্মনির্ভর।
পরিশেষে,
সিলেটের মানুষের ঐক্য, প্রবাসীদের ভালোবাসা আর স্বায়ত্তশাসনের স্বাধীনতা যদি একসঙ্গে মিলে যায়,
তাহলে সিলেট শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার এক আদর্শ মডেল অঞ্চল হয়ে উঠতে পারে।
লেখক: কে.এম.এম সুহেবুর রহমান,সমাজকর্মী ও ক্রীড়াবিদ।
Editor and Publisher: Foysol Ahmed Malik,
Office: Osmaninagar, Sylhet bangladesh. Email: sylhetbdview@gmail.com,
Mobile: WhatsApp: 01711338911
www.sylhetbdview.com