ওসমানীনগর প্রতিনিধি:সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও হাটবাজারে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে স্থাপন করা হয়েছিল সরকারি সৌরবিদ্যুৎচালিত স্ট্রিট লাইট। প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার স্টিলের খুঁটির উপর বসানো হয়েছিল এসব লাইট। উদ্দেশ্য ছিল—রাতের অন্ধকার দূর করে নিরাপদ ও আলোকিত গ্রামীণ পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বর্তমানে এসব স্ট্রিট লাইটের অধিকাংশই বিকল হয়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর ধরে, অথচ দেখার যেন কেউ নেই!
সরকারি অর্থে স্থাপিত এই লাইটগুলো এখন ব্যবহারের অযোগ্য।
উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়কে স্থাপিত স্টিলের খুঁটিগুলো এখন কেবল নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অযত্ন ও অবহেলার কারণে লাইটগুলো একে একে বিকল হয়ে পড়লেও, এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। এতে উপকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওসমানীনগরের সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় লাইটগুলো স্থাপন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো ‘চুক্তিভিত্তিক এক বছরের’ রক্ষণাবেক্ষণ করলেও, মেয়াদ শেষ হতেই তারা একেবারে গা ঢাকা দিয়েছে। এরপর থেকে আজ অবধি মেরামতের কোনো উদ্যোগ বা নজরদারি চোখে পড়েনি।
জনগণের অভিযোগ—"সরকারি মাল দরিয়ামে ঢাল!"
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই প্রকল্পে লাইট মেরামতের কোনো বাজেট না রেখে হাজার কোটি টাকার লাইট বসানো হয়েছে, যা এখন সম্পূর্ণ অকার্যকর। এটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থের অপচয়।” অনেকে বলেন, “মেরামত না করে এভাবে ফেলে রাখা প্রকল্প মানেই হচ্ছে জনগণের করের টাকার অপব্যবহার।”
ভুক্তভোগী এলাকা ও জনগণের ক্ষোভ:
বিকল স্ট্রিট লাইটের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পশ্চিম পৈলনপুর, বুরুঙ্গা, সাদীপুর,ইব্রাহিমপুর, গোয়ালাবাজার, তাজপুর, দয়াময়ী ও উছমানপুর ইউনিয়নের ইশাগ্রাই, হাজিপুর, আলীপুর, গলমুকাপন, সিরাজনগর, তিলাপাড়া, কামারগাঁও, মোবারকপুর, গাভুরটিকি, ইলাশপুর, দুলিয়ারবন্দ, কলারাই, ভাড়েরা, বরায়া কাজিরগাঁও, চকবাজার, মিরারগাঁও, খন্দকার বাজার, ইছামতী, থানাগাঁও, লতিপুরসহ আরও বহু গ্রামের স্ট্রিট লাইট বিকল অবস্থায় পড়ে আছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মন্তব্য:
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহেল রানার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান—“স্ট্রিট লাইট স্থাপনের পর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের এক বছরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল। এখন এগুলোর মেরামতের দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদের ফান্ড থেকে করা প্রয়োজন।”
স্থানীয়দের দাবি:
ভাগলপুর গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল মিয়া ও আরও অনেক ভুক্তভোগী জানান, জনস্বার্থে দ্রুত এসব স্ট্রিট লাইট মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। তারা বলেন, “সরকারি অর্থ ব্যয় করে জনকল্যাণমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, কিন্তু তা যদি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেটি শুধুই লোক দেখানো কাজ হয়ে দাঁড়ায়।”
সরকারি প্রকল্পের টেকসই ব্যবহার ও জনসেবায় সত্যিকারের সুফল পেতে হলে শুধু স্থাপন করলেই হবে না—বরং প্রয়োজন নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও স্থানীয় পর্যায়ে জবাবদিহিতা।
ওসমানীনগরের মতো উপজেলার প্রতিটি গ্রামে সৌর স্ট্রিট লাইটের কার্যকারিতা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
Editor and Publisher: Foysol Ahmed Malik,
Office: Osmaninagar, Sylhet bangladesh. Email: sylhetbdview@gmail.com,
Mobile: WhatsApp: 01711338911
www.sylhetbdview.com