ইসলামী শিক্ষা ইসলামী রাজনীতি: খতিব তাজুল ইসলাম


admin প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫, ১:২৫ পূর্বাহ্ন /
ইসলামী শিক্ষা ইসলামী রাজনীতি: খতিব তাজুল ইসলাম

সিলেট বিডি ভিউ: ইসলামী শিক্ষার মানদণ্ডে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি আলিয়া মাদরাসা গুলোর সিলেবাস ছিল বেশ আকর্ষণীয় ও অনুকরণীয়। খুবই কার্যকর এই সিলেবাসটি যদি সঠিক ভাবে মুল‍্যায়ন পাঠন পঠন হত এবং আদর্শিক বিষয়ের গুরুত্ব থাকতো তাহলে বিশ্বে নাম্বার ওয়ান মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ আত্মপ্রকাশ করতো। কিন্তু সেটা হচ্ছেনা। সরকারি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে।

বাকি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা ব‍্যবস্থা হল নিছক ধর্মীয় শিক্ষার উপর প্রতিষ্ঠিত। ফিকহ আকাইদের কিতাবি বিষয় এবং নামাজ রোজা পাক পবিত্রতার কিছু জ্ঞান ব‍্যতিত আধুনিক সমাজ পরিচালনার কোন জ্ঞান সেখানে নাই। কওমি শিক্ষায় দুনিয়াকে ঘৃণা করা শিখায়। দুনিয়া উপার্জন ও কর্মগুলোকে নেহায়েত ছোট করে দেখানো হয়। আধুনিক অর্থনীতি বিনির্মানের পরিকল্পনা অস্বীকার করে। নেহায়েত যাকাত সাকাত নির্ভর অন‍্যের দয়া ও করুনায় বাঁচা শিখায়। আধুনিক সমরাস্ত্রের কথা তো কল্পনাবিলাস।
এজন‍্য শুধুমাত্র ধর্মীয় উত্তেজনার মধ‍্যে খুঁজেন সকল সমাধান। সবকিছুই রাস্তায় মিছিলে আর কিছু কিছু মিডিয়ায় গরম গরম বয়ানের মাধ্যমে সুরাহা খুঁজেন। খুবই হাস‍্যকর।
এসব কারণে ধর্মীয় শিক্ষার অপব্যবহার ও অপব‍্যখ‍্যা চলছে। আদালত, প্রশাসন, মেডিকেল, পুলিশ সেনা ও নিরাপত্তার জন‍্য করনীয় কি সেটার বিষয়ে কওমি অংগন অজ্ঞ বা অন্ধকারে। বর্তমানে ৯০% কওমি মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ভরসা জাগাচ্ছেনা। সমাজ ও এলাকায় কোন প্রভাব নাই। টাইটেল সনদের রাষ্ট্রীয় কোন ওজন নাই।

স্কুল কলেজ গুলোতে আধুনিক শিক্ষার নামে আধুনিক কেরানি বানানোর শিক্ষা চলমান। ৯০% মুসলিমদের দেশে সরকারি ভাবে এরকম ইসলামহীন শিক্ষা ব‍্যবস্থা খুবই হতাশাজনক। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দরকার। এজন‍্য কিন্তু কারো কোন মাথাব্যথা নাই।

এসমস্ত কারণে রাজনীতিতে সমান প্রভাব পড়ছে।
স্কুল কলেজ থেকে যারা আসছে কেবল কেরানীর দল। উন্নত সমাজ বিনিরমানের কোন আইডিয়া তাদের নাই। লুটো আর খাও। সবখানে কেবল খাই খাই ভাব।
কওমি অংগন থেকে বেরোনো রাজনীতি বলতে চিল্লাচিল্লি হায় হুতাশ। একটি সিটের ধান্ধা। নুন‍্যতম রাজনৈতিক সক্ষমতা পারংগমতা নাই। কখনো নৌকা কখনো ধানের শীষ কখনো লাংগল। এই হল তাদের রাজনীতির দৌড়। নিজস্ব স্বকীয়তা নাই।
এসব দলকে রাজনৈতিক দল বললে ভুল হবে। যাস্ট ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর বিভাজিত দল।

বাংলাদেশ জামাতে ইসলামি তাদের মধ‍্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সফলতা দেখিয়েছে। অর্থনীতিতেও তারা বেশ এগিয়ে। আধুনিক সমাজ বিনিরমানে তাদের যোগ্যতা খারাপ না। ইসলামি রাজনীতি বলতে যা বোঝায় সেটার কিছু ছিটাফুটা তারা লালন করে।
কিন্তু দেশি বিদেশী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে জামাত মনে বেশ হচ্ছে ক্লান্ত।
তবে আপামর জনসাধারণের দল জামাত কেন হতে পারছেনা সেটা নিয়ে আরেকদিন লিখবো। জামাত তাদের হেকমতে আমলিতে কিছুটা একঘুয়েমি আছে বিধায় অন‍্যান‍্য ইসলাম নামের দলের সাথে মিলে মিশে কাজ করতে পারছেনা।

উপসংহারে বলবো যে আপনি শিক্ষাবিদ হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ করুন। আর রাজনীতিবিদ হলে রাজনীতিই হোক আপনার ময়দান। মসজিদ মাদ্রাসা খানকা আবার সংসদ সব খাবেন তা হবেনা। পথ আলাদা করুন কাজে সফলতা আসবে ইনশাআল্লাহ।

পরিশেষে বলবো যে বিশ্ব এখন ৩য় বিশ্বযুদ্ধের খুব কাছাকাছি। তাই দেশ সমাজ রাষ্ট্র ও নাগরিকের সুরক্ষার কথা ভাবুন সকলে।
মাআসসালাম।

লেখক: খতিব তাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, কওমি মাদরাসা শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের রূপকার।