সিলেট বিডি ভিউ:‘সাত সমুদ্র তেরো নদী বাঙালিয়ানা নিরবধি’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-বাকার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম বাংলা মেলা।
গেল ২৯শে জুন ব্রঙ্কসের ওয়াটারবেরি অ্যাভিনিউতে আয়োজিত দিনব্যাপী এই বর্ণাঢ্য আয়োজনে দেশীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টির এক প্রাণবন্ত উপস্থাপন ঘটে, যেখানে সামিল হন প্রায় দশ সহস্রাধিক প্রবাসী বাঙালি।
চিরায়ত বাংলার আবহে মেলা প্রাঙ্গণ ছিল লোকে লোকারণ্য। মেলা যেন পরিণত হয়েছিল এক টুকরো বাংলাদেশে, যা নতুন প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতিকে আরও নিবিড়ভাবে তুলে ধরতে সাহায্য করে। রকমারি স্টলে দেখা যায় হরেক রকমের পোশাক, বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী, মুখরোচক দেশীয় খাবার এবং বিনোদনের নানান আয়োজন।
প্রধান অতিথি হিসেবে দশম বাংলা মেলার উদ্বোধন করেন গ্লোবাল পিস অ্যাম্বাসেডর এবং পিপল আপ-এর প্রেসিডেন্ট ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ। তাঁর অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য উপস্থিত সকলের মন জয় করে।
স্মরণকালের এই বর্ণাঢ্য মেলায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস। মেয়র তার বক্তব্যে এমন একটি সফল মেলা আয়োজন এবং এতো বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটানোর জন্য বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি আগামীতে এই সংগঠনের সাথে যেকোনো কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন, যা কমিউনিটির জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা।
সংগঠনের সভাপতি সারওয়ার চৌধুরী-এর সভাপতিত্বে এবং সাবেক সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকন-এর পরিচালনায় উদ্বোধন পর্বটি ছিল প্রাণবন্ত।
সাধারণ সম্পাদক শাহ বদরুজ্জামান রুহেল ও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আশরাফুল হাসান বুলবুল-এর যৌথ সঞ্চালনা অনুষ্ঠানের আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে তোলে।
উদ্বোধন পর্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল হাসিম হাসনু, কমিউনিটি বোর্ড নাইনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এন মজুমদার, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মিশিগান (বাম) এর সভাপতি জাবেদ চৌধুরী, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব মিশিগান (বাম) এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মূলধারার রাজনীতিবিদ সুমন কবির, বিশিষ্ট কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট জুনেদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বিশিষ্ট কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট আব্দুর রহিম বাদশা, মাসুদ রহমান, কুলাউড়া অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাংবাদিক সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, সিপিএ আহাদ আলী, রিয়েলটর সালেহ উদ্দিন, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর বিলাল চৌধুরী, ব্রোকার আকিব হোসেন, রিয়েলটর শেরুজ্জামান শিরু, সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন লুকু, সহ-সভাপতি মাকসুদা আহমেদ ও ফয়সল আহমেদ, মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সংগঠনের প্রচার ও গণসংযোগ সম্পাদক মোহাম্মদ লিয়াকত আলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ, এমডি আলাউদ্দিন, শাহ কামাল উদ্দিন, মেলা কমিটির সদস্য সচিব ও সংগঠনের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ রনি, স্কুল শিক্ষা ও সমাজসেবা সম্পাদক ও মেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সালমা সুমী এবং কার্যকরী পরিষদ সদস্য চৌধুরী মোমিত তানিম।
এছাড়াও সংগঠনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান জামান রানা, ক্রীড়া ও বিনোদন সম্পাদক শাহ ইকবাল রাজু, এবং কার্যকরী পরিষদ সদস্য রেহানুজ্জামান রেহান।
কমিউনিটির অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এরশাদ সিদ্দিকী, লেফটেন্যান্ট বিলাল উদ্দিন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সাইদ আহমেদ ও ফয়েজ চৌধুরী, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মখন মিয়া, সংগঠনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির শামীম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মনজুর চৌধুরী জগলুল, মোতাসিম বিল্লাহ তুষার, ফারমিস আখতার, জামাল আহমেদ, সাংবাদিক সিদ্দিকুর রহমান সুমন, সাংবাদিক ফয়সল আহমেদ মুন্না, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট খবির উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।
সাংস্কৃতিক পর্বে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী প্রতীক হাসান, বাউল কালা মিয়া, রেশমী মির্জা, এবং শাহ মাহবুব। মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন নিউইয়র্কের উদীয়মান নৃত্য শিল্পী মায়া এঞ্জেলিনা ।
সফল বাংলা মেলার সমাপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি সারওয়ার চৌধুরী মেলার পৃষ্ঠপোষক বাংলা সিডিপ্যাপ অ্যান্ড আলেগ্রা, এইচ ব্রুশ ফিশার, স্টার্লিং ডায়াগনস্টিক, আহাদ আলী অ্যান্ড কোং, গ্রী মেকানিক্যাল ইয়ঙ্কার্স, খলিল বিরিয়ানি, পার্কচেস্টার ব্রঙ্কস রিয়েলিটি, হেলথ ফার্স্ট, আল আকসা রেস্টুরেন্ট, নীরব রেস্টুরেন্ট, সিলেট মটরস, শাপলা কফি হাউস, অ্যাটর্নি পেরী ডি সিলভা, রিয়েলটর ময়নুজ্জামান চৌধুরী, শেরুজ্জামান শিরু, শাহ জে চৌধুরী-এর প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মেলার শেষ পর্বে ছিল র্যাফেল ড্র এবং পুরস্কার বিতরণী, যা উপস্থিত সকলের মধ্যে বাড়তি উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পরিশেষে, সংগঠনের সভাপতি সারওয়ার চৌধুরী মেলায় আগত সকলকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি ভবিষ্যতেও বাকার বিভিন্ন কার্যক্রমে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত ও আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করে মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এই সফল আয়োজন আবারও প্রমাণ করে দিল যে প্রবাসে থেকেও বাঙালি সংস্কৃতি ও কৃষ্টির প্রতি তাদের ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতা অটুট।
শাহ বদরুজ্জামান রুহেল, নিউইয়র্ক।
.
আপনার মতামত লিখুন :